কলমে: কামরুন তানিয়া
জিহাদঃ The word Jihad means that to holy war
মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কুরআনে জিহাদকে মুসলমানদের জন্য একটি ‘কর্তব্য’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে; সেখানে ‘হারব’ বা ‘যুদ্ধ’ শব্দ ব্যবহার না করে ‘জিহাদ’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
“জিহাদ” আরবী শব্দ। এর অর্থ হলো কঠোর পরিশ্রম করা, চেষ্টা করা, সাধানা করা, সংগ্রাম করা, কষ্ট বহন করা, ।
ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহর দ্বীনকে (ইসলামকে) বিজয়ী করার লক্ষে এবং একমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য কুফরী তথা ইসলাম বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে মুমিনের সকল প্রচেষ্টা (দৈহিক, মানসিক, আর্থিক, জ্ঞানবুদ্ধি) নিয়োজিত করাকে “জিহাদ” বলে।
অন্য অর্থে স্বীয় নফসের বিরুদ্ধে, শয়তানের বিরুদ্ধে, ফাসেকদের বিরুদ্ধে এবং মুশরিক-মুনাফীক-কাফেরদের বিরুদ্ধে জান-মাল ও জবান দিয়ে লড়াই করাকে “জিহাদ” বলা হয়।
জিহাদের প্রকারভেদ
জিহাদ ফরজ হওয়ার শর্ত সম্পর্কে আলোচনা করার পূর্বে জিহাদের প্রকারভেদ সম্পর্কে অবগত হওয়া অত্যন্ত জরুরী। কারণ অনেক মানুষই জিহাদের প্রকারভেদ সম্পর্কে অজ্ঞ ও ভুল ধারনা পোষণ করে থাকেন । আমার মতে জিহাদ কে ০৪ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
১। নফস বা কুপ্রবৃত্তির সাথে জিহাদ করা
নফসের সাথে জিহাদের অর্থ হল নিজের নফসকে আল্লাহর আনুগত্যের কাজে বাধ্য করা, ভাল কাজের প্রতি সর্বদা তাকে আদেশ করা এবং অসৎ কাজ হতে বারণ করা। নফসের সাথে জিহাদ ব্যতীত কেউ শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করতে সক্ষম হবে না।
فَاِنَّ الۡجَنَّۃَ هِیَ الۡمَاۡوٰی – وَ اَمَّا مَنۡ خَافَ مَقَامَ رَبِّهٖ وَ نَهَی النَّفۡسَ عَنِ الۡهَوٰی
আর যে তার রবের অবস্থানকে(১) ভয় করে এবং কুপ্রবৃত্তি হতে নিজকে বিরত রাখে, জান্নাতই হবে তার আবাস। সূরা: নাযিআত, আয়াত: ৪০-৪১
ইসলাম আত্মার কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ না করতে উৎসাহিত করেছে। নাফসকে ইলাহী ফরমানের দিকে নিবিষ্ট করার লক্ষ্যে নাফসের বিরুদ্ধে সংগ্রামকে বলা হয় ‘জিহাদুন নাফস’ বা অন্তরের সংগ্রাম। মূলতঃ এ জিহাদই হ’ল সর্বোত্তম জিহাদ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, সিলসিলা ছহীহা হা/১৪৯১
اَفْضَلُ الْجِهَادِ مَنْ جَاهَدَ نَفْسَهُ فِيْ ذَاتِ الله عَزَّ وَ جَلَّ
‘সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হ’ল যে আল্লাহর জন্য স্বীয় কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ করে’।
রাসূল (ছাঃ) আরও বলেন, ইবনু হিববান হা/৪৬২৪
الْمُجَاهِدُ مَنْ جَاهَدَ نَفْسَهُ لِلَّهِ
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াস্তে স্বীয় নাফসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে, সেই প্রকৃত মুজাহিদ’।
এখন আমরা নাফস কি তা না জানলে নাফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করবো কিভাবে। আসুন নাফস সম্পর্কে জেনে নেই।
নফস শব্দটি আরবি। নফস শব্দের অর্থ প্রাণ, আত্মা। যা সকল প্রাণির দেহেই বিরাজমান। নফস হলো সেই অলৌকিক বস্তু, যা মানুষের দেহে ফুঁ দিয়ে প্রাণের সঞ্চার করা হয়। অথবা নফস সেটাই যা আল্লাহ মানব দেহে ফুঁকে দিয়েছেন। মৃত্যুর সময় যা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।
পবিত্র কুরআনে সূরা: আলে-ইমরানঃ আয়াত-১৮৫ তে আল্লাহ তায়ালা বলছেনঃ-
کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ؕ وَ اِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ اُجُوۡرَکُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ
“জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। কেবলমাত্র কেয়ামতের দিনই তোমাদেরকে তোমাদের কর্মফল পূর্ণ মাত্রায় দেয়া হবে”
এই নাফসকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে, আসুন কোন প্রকারের নাফস কি কাজ করে জেনে নেই।
নাফস বা আত্মার প্রকারভেদ :
১. ‘নাফসে আম্মারাহ’
নাফসে আম্মারার স্বভাবগত চাহিদা এটাই যে, মন্দ কামনা, শয়তানের অনুসরণ, কু-প্রবৃত্তির বাসনা চরিতার্থ করা, যাতে করে হারাম কাজ করা তার জন্য সহজতর হয়। এই আত্মা সর্বদা রুহ এর সাথে যুদ্ধ করে জয়ই হয়। রুহ সর্বদা পরাজয় হয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন সুরা ইউসুফঃ আয়াত- ৫৩
اِنَّ النَّفۡسَ لَاَمَّارَۃٌۢ بِالسُّوۡٓءِ اِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّیۡ
নিশ্চয় মানুষের নাফস খারাপ কাজের নির্দেশ দিয়েই থাকে, কিন্তু সে নয়, যার প্রতি আমার রব দয়া করেন
যখন মানুষ ইসলাম ও ঈমান অনুযায়ী চলে না তখন নাফসুল আম্মারাহ্ প্রভাব বিস্তার করে এবং সে পাপাচারে নিমজ্জিত হয়। যারা গান-বাজনা-অশ্লীলতা সহ বিভিন্ন পাপে লিপ্ত এবং তাতে তারা ইতস্তত বোধ করে না তাদের আত্মা নফসুল আম্মারাহ্।
২. ‘নাফসে লাওওয়ামাহ’
এ প্রকারের আত্মায়ও মন্দ, শয়তানী কুমন্ত্রণা, কুপ্রবৃত্তির বাসনা ইত্যাদি জিনিসের উদয় হয়; তবে পরক্ষণেই এই নাফসের অধিকারী ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য নিজেকে অধিক ধিক্কার দেয়, তিরস্কার করে, অনুশোচনা প্রকাশ করে, অনুতপ্ত হয় ও লজ্জাবোধ করে। কেননা তাতে সামান্যতম হ’লেও ঈমানের জ্যোতি বিদ্যমান। আল্লাহ বলেন (সুরা ক্বিয়ামাহ, আয়াত ১-২)।
وَ لَاۤ اُقۡسِمُ بِالنَّفۡسِ اللَّوَّامَۃِ – لَاۤ اُقۡسِمُ بِیَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ
‘আমি শপথ করি ক্বিয়ামত দিবসের, আরও শপথ করি সেই আত্মার, যে নিজেকে ধিক্কার দেয়’
এই নফস মাঝে মাঝে রুহ এর সাথে যুদ্ধ করে জয়ই হয় আবার মাঝে মাঝে রুহ জয়ই হয়। এই নাফসের অধিকারী ব্যক্তিবর্গ ভালও করেন, আবার মন্দও করেন। তবে, পার্থক্য যে, মন্দ কাজ করার পর পরই অনুশোচনা বা বিবেকের দংশণে জর্জরিত হন। অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এদের আল্লহপাক হয়তো ক্ষমা করে দিবেন, অথবা মন্দকর্মের ফল যতটুকু হয় তা পৃথিবীতে বা পরকালে দিয়ে মুক্তিদান করবেন। যখন মানুষ তার ভুল বুঝতে পারে এবং তওবা করে। যখন কেউ ইসলাম জানতে ও মানতে শুরু করে তখন নাফসুল লাওয়ামা প্রভাব বিস্তার করে এবং সে অন্যায় করতে বিব্রত বোধ করে। এটা হল মানুষের শুদ্ধতার প্রাথমিক অবস্থা।
৩. নাফসে মুত্বমাইন্নাহ
এই প্রকারের আত্মা আল্লাহর আনুগত্য ও যিকর দ্বারা মনে প্রশান্তি অনুভব করে। সকল প্রকার আনুগত্যের কর্মকান্ড সম্পাদন করে ঈমানের পরিপূর্ণ স্বাদ লাভ করে এবং সমস্ত অন্যায় ও সীমালংঘন থেকে সে পরিপূর্ণ রূপে মুক্ত থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন (সুরা ফাজর, আয়াত ২৭-২৮)
ارۡجِعِیۡۤ اِلٰی رَبِّکِ رَاضِیَۃً مَّرۡضِیَّۃً – یٰۤاَیَّتُهَا النَّفۡسُ الۡمُطۡمَئِنَّۃُ
‘হে প্রশান্ত আত্মা, তুমি প্রশান্তচিত্তে তোমার পালনকর্তার দিকে ফিরে চলো।
এই আত্মা সবসময়ে রুহ এর সাথে যুদ্ধ করে পরাজয় হয়। সত্য বা রুহ সর্বদা জয়ই হয়। একজন মুসলমান দাবীকার ব্যক্তির নাফসে মুত্বমাইন্নাহ থাকা উচিত।
সুতরাং মুসলিম ব্যক্তি তার আত্মার পরিশোধনে এবং আল্লাহর আনুগত্যে নিবিষ্ট হ’তে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।
কেউ আমাকে প্রশ্ন করতে পারে কিভাবে নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করবো। আসুন জানার চেষ্টা করি
কিভাবে নাফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করব? :
নাফসের বিরুদ্ধে সদা সংগ্রাম অব্যাহত রাখা অতীব জরূরী। কিন্তু এই জিহাদ করার পথ ও পন্থা কি তা জানতে হবে। এক্ষণে আমরা নাফসের বিরুদ্ধে জিহাদের কতিপয় পন্থা আলোচনা করব, যা আমাদেরকে কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে বিজয়ী হ’তে সাহায্য করবে।
১. ইলমে দ্বীন হাছিল করে :
পবিত্র কুরআনের সুরা যুমার আয়াত-০৯ বলা হয়েছে
قُلۡ هَلۡ یَسۡتَوِی الَّذِیۡنَ یَعۡلَمُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ؕ اِنَّمَا یَتَذَکَّرُ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ
বলুন, ‘যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান? বুদ্ধিমান লোকেরাই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে।’
আমরা মানুষ, সৃষ্টির সেরাজীব আশরাফুল মাখলুকাত। জন্মগতভাবে অন্য প্রাণিদের মতো-ই প্রাণি। তবে অন্যান্য প্রাণি ও আমাদের মাঝে পার্থক্য হলো, ‘জ্ঞান থাকা’ বা ‘না থাকা’। আমাদের খেয়ে-ধেয়ে শুধু জীবনযাপন করলেই হয়না, অর্জন করতে হয় জ্ঞান, হতে হয় জ্ঞানী। আর আমাদের আরেকটি সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচয় হলো, আমরা মুসলমান, আমাদের ধর্ম ইসলাম। আমাদের ধর্ম ইসলামে প্রতিটি মানুষকে বলা হয়েছে জ্ঞান অর্জন করার কথা। ইলমে দ্বীন হাছিলের মাধ্যমে আমরা কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারি। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর রাসূলের নিকট অবতীর্ণ অহী-র সূচনা হয়েছিল ‘পড়’ নির্দেশের মাধ্যম। আল্লাহ বলেন, (আলাক্ব-১)
اِقۡرَاۡ بِاسۡمِ رَبِّکَ الَّذِیۡ خَلَقَ
পড়! তোমার রবের নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন’ ।
আর এই ইলমে দ্বীনের প্রধান উৎস হ’ল পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ।
নাফসের স্রষ্টা অবশ্যই নাফস সম্পর্কে সর্বাধিক অবগত, যিনি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল বিষয়ই জানেন। ভাল আত্মা ও খারাপ আত্মা সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণ অবহিত। এজন্য তাঁরই প্রেরিত মহাগ্রন্থ কুরআন মাজীদ মানবাত্মার অন্যতম গাইড বুক হিসাবে বিবেচিত।
কিতাবুল্লাহর অনুসরণ ও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অনুকরণের মাধ্যমে যখন আমরা ইলমে দ্বীন অর্জনে সচেষ্ট হব, তখন এতদুভয়ের সমন্বয়ে ইসলামের যাবতীয় বিধি-নিষেধ সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞানী হয়ে দাওয়াত ও তাবলীগে আত্মনিয়োগ করতে পারব।
আল্লাহ ইরশাদ করেন, (সুরা বাক্বারাহ, আয়াত ২)
ذٰلِکَ الۡکِتٰبُ لَا رَیۡبَ ۚۖۛ فِیۡهِ ۚۛ هُدًی لِّلۡمُتَّقِیۡنَ
এটা এমন একটা কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই, আল্লাহভীরুদের জন্য এটি পথ প্রদর্শক’ ।
যেহুত এই কিতাবে কোন সন্দেহ নেই তাই আমরা কুরআন থেকে জ্ঞান অর্জন করে আমরা নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারি।
২. আমলে ছালেহ :
আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করে তাকে চলাফেরা ও আমলের ক্ষমতা দিয়েছেন। যাতে সে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে পৃথিবী আবাদ করার জন্য সেখানে বিচরণ করে। মানুষকে আল্লাহ তা‘আলা ছিরাতে মুস্তাক্বীমের পথে আহবান করেছেন। তাকে আমলে ছালেহের মাধ্যমে ক্বিয়ামতের দিন তার সাক্ষাৎ লাভের ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ইনশিক্বাকঃ আয়াত- ৬
یٰۤاَیُّهَا الۡاِنۡسَانُ اِنَّکَ کَادِحٌ اِلٰی رَبِّکَ کَدۡحًا فَمُلٰقِیۡهِ
‘হে মানুষ তোমাকে তোমার রবের কাছে পৌঁছা পর্যন্ত কষ্ট স্বীকার করতে হবে। অতঃপর তাঁর সাক্ষাৎ পাবে’ ।
ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, ‘তোমাকে তোমার রবের সাক্ষাৎ পেতে অত্যন্ত সাধনার মাধ্যমে আমলে ছালেহ সম্পাদন করতে হবে। অতঃপর নেক কাজ করলে নেককার হিসাবে তাঁর সাথে তোমার সাক্ষাৎ হবে। আর বদ কাজ করলে বদকার হিসাবে তাঁর সাথে তোমার সাক্ষাৎ হবে’। সুতরাং নিজেকে আমলে ছালেহ এর উপরে দৃঢ় রাখার মাধ্যমে নফসের কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ করতে হবে।
৩. দাওয়াতে ইল্লাহ করে :
তৃতীয় পদ্ধতিটি হচ্ছে আল্লাহর দিকে আহবানের মাধ্যমে জিহাদে নিমগ্ন হওয়া। অর্জিত জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করা প্রত্যেকের ঈমানী দায়িত্ব। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, (সুরা তওবা, আয়াত ১২২)
وَ لِیُنۡذِرُوۡا قَوۡمَهُمۡ اِذَا رَجَعُوۡۤا اِلَیۡهِمۡ لَعَلَّهُمۡ یَحۡذَرُوۡنَ
‘যখন তারা স্বজাতির কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, তখন যেন তাদেরকে সতর্ক করে, তাহ’লে তারা বাঁচতে পারবে’ ।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন) হাদিস/৩৪৬১
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَلِّغُوْا عَنِّيْ وَلَوْ آيَةً
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার কথা পৌঁছিয়ে দাও, তা যদি এক আয়াতও হয়।
৪. ধৈর্যধারণ করে:
ধৈর্য একটি মহৎ গুণ। ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিজয় আসে। ধৈর্যধারণ করাটাও নাফসের সাথে সংশ্লিষ্ট। তাই নাফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে হলে বিপদাপদে ধৈর্যশীল হ’তে হবে। ধৈর্য ধারণ করতে হবে ইলম হাছিলের ক্ষেত্রে, আমলে ছালেহ সম্পাদনের ক্ষেত্রে এবং দাওয়াত ও তাবলীগের ক্ষেত্রে। তায়েফের জনগণকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরই কল্যাণের জন্য আহবান করেছিলেন। অথচ তিনি মার খেয়ে রক্তাক্ত হয়ে ফিরে আসলেন; কিন্তু ধৈর্যহারা হলেন না। বাতিলপন্থীরা অন্যায়ের উপর ধৈর্যধারণ করতে পারলে, হকপন্থীদের আরো বেশী ধৈর্যধারণ করা উচিত। অতএব জিহাদের ময়দানে টিকে থাকতে হ’লে অবশ্যই ধৈর্যের সাথে ইলম, আমল, দাওয়াত ও তাবলীগে নিবিষ্টচিত্তে মনোনিবেশ করতে হবে। অন্যথায় প্রকাশ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের কাতারে শামিল হ’তে হবে।
ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ)-এর এ কথার ব্যাখ্যা হ’ল, প্রত্যেক মানুষ বিভিন্ন কর্মকান্ড সম্পাদন করে। তাদের কেউ স্রেফ আল্লাহর আনুগত্যেই নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে। ফলে আল্লাহ তাকে আযাব থেকে মুক্ত করেন। আর কোন মানুষ শয়তানের অনুসরণ করে, তার খেয়াল-খুশিমত জীবন পরিচালনা করে। ফলে সে শয়তানের সাঙ্গ-পাঙ্গদের সঙ্গী হয়ে ধ্বংসে নিপতিত হয় এবং নিজেকে ধ্বংস করে ফেলে’।
আল্লাহ বলেন, (আছর ১০৩/১-৩)
– اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ تَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَ تَوَاصَوۡا بِالصَّبۡرِ – اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ– وَ الۡعَصۡرِ
সময়ের শপথ, নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মাঝে নিপতিত, কিন্তু তারা নয়, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে আর পরস্পরকে উপদেশ দিয়েছে হকের এবং উপদেশ দিয়েছে ধৈর্যের।
ছবর তিন প্রকার-
(১) বিপদে ছবর করা (২) পাপ থেকে ছবর করা অর্থাৎ বিরত থাকা (৩) আল্লাহর আনুগত্যে ছবর করা অর্থাৎ দৃঢ় থাকা।
প্রথমটি ‘আম’ বা সাধারণ। দ্বিতীয়টি ‘হাসান’ বা সুন্দর এবং তৃতীয়টি ‘আহসান’ বা সবচেয়ে সুন্দর।
অতএব নফসের বিরুদ্ধে জিহাদের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে যেকোন খারাপ ও পাপকর্ম হতে বিরত থেকে হক্বের উপরে নিজেকে দৃঢ় রাখার মাধ্যমে ধৈর্যধারণ করা।
সর্বশেষ
- মুন্সীগঞ্জে পূজা উদযাপন নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
- নওগাঁর পোরশায় নিতপুর সীমান্তে শীতলীঘাট এলাকার বিএসএফ কতৃক সানাউর শম্ভু ও নামে ২ বাংলাদেশী আটক
- নওগাঁয় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন
- পরিত্যক্ত অবস্থায় ১ কেজি ১০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার
- নওগাঁ ১১ টি উপজেলায় ভাদ্র মাসে প্রচন্ডগরমে বিদ্যুৎতের লোডশেডিং এর কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ
- মুন্সীগঞ্জে থানায় আগুন লুটপাটের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে : পুলিশ সুপার
সর্বাধিক পঠিত
- নতুন বছরে আসছে ভিন্ন ধরনের প্রেমের গল্প আন্ত:নগর
- তাড়াশে মারুফ হাসান নামের অপহৃত এক মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
- নিয়তির নিমজ্জিত বিধাতার বিধান
- আজ বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু
- 💕💕মাতা-পিতার মৃত্যুর পর সন্তানের করণীয়❤❤
- জয়পুরহাটে রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে পণ্যের মূল নির্ধারণ