সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪, ২৯ আশ্বিন, ১৪৩১
Live TV
সর্বশেষ

নূরে আলম

জান্নাত

দৈনিক দ্বীনের আলোঃ নূরে আলম
২৯ জানুয়ারি, ২০২৪, ৬:০২ অপরাহ্ণ | 64
জান্নাত
২৯ জানুয়ারি, ২০২৪, ৬:০২ অপরাহ্ণ | 64

যেখানের বাসিন্দারা পাবে চিরযৌবন পূর্ণ জোয়ারে।
রোগ-ব্যাধি,ক্লান্তি,দূর্বলতা
দেহের অবনতি, ব্যাথা, জরাজীর্ণতা
আসবেনা কষ্মিন কালেও দুয়ারে।
হবেনা ঘুমের প্রয়োজন
থাকবেনা মৃত্যুর আয়োজন।
কোনরকম দূর্ঘটনা, ঝড়-ঝনঝা
প্রাকৃতিক দুর্যোগের আভাস
আগমনের ত্রাস,ঘটাবেনা জীবনে ছন্দপতন।
যে জীবনের শুরু আছে নেই শেষ,
ভোগে -ভ্রমনে,স্বাদ-ঘ্রাণ গ্রহণে
থাকবেনা বিন্দুমাত্র তাড়াহুড়োর লেশ।
পঁচা গলা গাঁন্ধা এ শব্দগুলোর
হবেনা সেথায় বসতি,
কাঁদা বালি ধুলার থাকবেনা চিহ্নটি,
প্রয়োজন পড়বেনা
দাঁত মাজা,গোসল ইত্যাদি ইত্যাদি।
পায়খানার পরিবর্তে সুঘ্রাণযুক্ত ঢ়েকুর দিবে
হজম হয়ে যাবে স্বাদের সব উপকরণ।
প্রসাবের পরিবর্তে সুঘ্রাণযুক্ত ঘামের হবে নিঃস্বরণ।
কফ, নাকের ময়লা,কানের ময়লাসহ
সকল ময়লা এবং নাপাকির
জান্নাতে প্রবেশ একেবারেই বারণ।
কারণ এইটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার আস্তরণ,আবরণ।
এর আচরণ সুগন্ধির বিচরণ,বিতরন।

সে জীবনের সাথে হবেনা সাথী
কাজকামের মাতামাতি।
এখানে যেমন এমনি এমনি
আগাছা বণ্যগাছের উৎপত্তি,
সেখানেও তেমনি সবকিছু ফলবে,
রান্না হয়ে চলে আসবে
স্বয়ংক্রিয় ধারায়
মনের খোরাকের বিচিত্র মেলায়।
জান্নাতে থাকবেনা সূর্যের আলো
আসবেনা কখনো রাতের কালো।
বরং জান্নাতের মানুষজন
গাছপালা পশুপাখি প্রাসাদ আসবাবপত্রাদি
সবকিছু থেকেই হবে আলোর সমুজ্জ্বল বিস্তৃতি।
উদাহরণস্বরুপ বলা যায় জোনাকির কথা ভালো।
যে আলো হবে প্রশান্তির স্নিগ্ধতায় টলোমলো।
সেখানে থাকবেনা ইবাদতের ব্যবস্হাপনা।
তবে যিনি দিয়েছেন আমায়
একটি সত্ত্বার সম্মাননা,
যে সত্ত্বার আনন্দ দিতে,পরিতৃপ্ত করতে
করেছেন এত শত বিচিত্র ব্যবস্হাপত্র
করে দয়ামায়া।
সে ব্যবস্হাপনার রহস্য এমন
যা বের করার
নেই কারো কোন ক্ষমতারও ছায়া।
যেখানে সবখানে তিনি একক ক্ষমতার অধিকারী,
যার নেই দ্বিতীয়টি।
এমনি সব উপলব্ধিতে
ফেরেশতাসহ জান্নাতি,জান্নাতির তরে খেদমতি
গাছপালা, পশুপাখি সবই
তার আজীব নেয়ামতপূর্ণ
জীবনদাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা ভরি
তৃপ্তির ঢ়েকুর তুলি
গাইবে গুণগান নতশিরি।
বাতাসে গাছপালার ঐ পাতাতে ভাসবে বাজবে
কেবল তাঁরই প্রশংসার অভূতপূর্ব
অদ্ভূত মন মাতানো সুরের ধ্বনি প্রতিধ্বনি।

সেখানে থাকবেনা কোন অসার বাক্য
বকা-ঝকা, মনোমালিন্য।
সবাই বলবে সালাম শান্তি।
চারপাশে আছে যা
সব প্রকাশ করবে যার যার সুরভী।
সে সুরভীর সাথে চলেনা দুনিয়ার তুলনা।
দুনিয়াতেতো যা দেখছি, পেয়েছি, খাচ্ছি
সবই বুঝবার জন্য নমুনা।
জান্নাতি দেখে ফল,
বলবে এতো আমরা খেয়েছি দুনিয়াতেও কতনা
তবে কামড় দিয়ে বুঝবে
না,ঐখানে যা খেয়েছি তা কেবলই ছিল উপমা
মাটিরই আলপনা।

বস্তুত মানুষ পেয়েছে এমনই চাহিদাতে অন্তর
যেখানের আবেদনে অনন্ত অসীমেরই সমাদর।
কিন্তু দুনিয়া মানুষকে করেছে সম্পূর্ণ হতাশ,
দুই বা তিন প্লেট বিরানী রেজালা রোষ্ট কাবাব
তারপরেই সাধে বাঁধ।
আর দুই বেলা বা তিন বেলা এমন খেলেতো
ঘটে যায় হজমেরই সর্বনাশ।
অথচ জান্নাতে এক লক্ষ আশি হাজার খাদেম
তিন লক্ষ ষাট হাজার রসনার পাতে
প্রবেশ করবে দু’হাতে
জান্নাতি খাবে সব প্লেটসহ সহজাতে।
যেরুপ দুনিয়াতে কোন্ আইসক্রীম খাওয়া হয়
কোন্ সহ চেটেপুটে।
এরপর ছড়াবে ঢেকুরের সুরভী
হজম হয়ে খাদ্য উপাদানের ঘটবে সমাধি।
তার পরেও মন চাহেতো
আরো নিবে নিত্য নতুন স্বাদ ইচ্ছে মত।

সেখানে জান্নাতির মত
তার খাদ্যের তরে খেদমতে নিয়োজিত
মাছ পশুপাখিসহ সকল প্রাণীর জীবনী হতেও
মৃত্যুকে করা হবে দূরবিত।
জান্নাতি ঘুরতে যাবে নদীতে
মাছ এসে আকুতি করবে তাকে খেতে
জান্নাতি যদি বলে হ্যাঁ খাব,
সীমাহীন আনন্দ নিয়ে সে জানতে চাইবে
কিভাবে খেতে চাও ভাব,
ঝোল ঝোল ভাজা নাকি কোপ্তা
না অন্য কোন ভিন্ন স্বাদে
খোশ হবে তোমার অন্তরআত্না।
যথাবিধি জান্নাতির মনোবাঞ্ছায়
স্বয়ংক্রিয় সেই রন্ধনশালায়
মাছের দেহ রসনায় রুপান্তরে
আসবে জান্নাতির দ্বারে।
জান্নাতি খাবে,
খেয়ে ফেলে দিলে কাটার কাঠামোতে
আর একটি আরও সুন্দর দেহ লাভে
আনন্দে খুশিতে
আবার ঘুরে বেড়াবে,
চলবে ফিরবে অথৈ পানিতে।
এমনি জান্নাতির খেদমতে থাকবে প্রাণ উচ্ছ্বল
পশুপাখিসহ সকল প্রাণ নতুনত্বের খুশিতে।

সেখানে দেয়া হবে বহু ধরনের
শরবত,দুধ,মধু,শরাব,স্বচ্ছ পানির নদ
দীর্ঘকায় প্রশস্ত।
না না দুনিয়ার মত এমন নয় নদী সমুদ্র
এতো কেবল দৃষ্টান্তস্বরূপ প্রদত্ত।
না না দুনিয়ার মত এমন নয় শরাব
যা খেলে হয় মানুষ অপ্রকৃতস্থ।
ও ভাল কথা জান্নাতে কিন্তু থাকবেনা
কোন ক্ষুধা তৃষ্ণার লেশমাত্র।
সেখানে মানুষ খাবে,পান করবে
কেবলই স্বাদ-ঘ্রাণ গ্রহণের নিমিত্ত।

প্রথম প্রথম সেখানটায় ঘটবে এমন যে
এক নহরে এক চুমুকে
পেরিয়ে যাবে সময় হাজার হাজার বছরে
অগত্যা ফেরেশতা এসে বলবেন
আর কত সময় এখানে কাটাবে হ্যাঁ রে
আরও কত নেয়ামত রয়েছে
এদ্বারে ওদ্বারে চর্তুদ্বারে।
জান্নাতি বলবে
কই আমিতো এইমাত্র চুমুক দিলাম আহারে।

এমনি স্বামী-স্ত্রীর প্রথম প্রহরে
মুগ্ধতার দৃষ্টিতেই কেটে যাবে
হাজার হাজার বছর
থাকবেনা কোন খবর।
অগত্যা ফেরেশতা এসে ধ্যান ভাঙ্গালে
হেসে বলবে এতো সমস্যায় পড়া গেল জব্বর,
এইতো সবে মাত্রই একত্র হলো আমাদের নজর।
হবেই না কেন এমন
দুনিয়াতেইতো দেখি কত রুপের মাধুরি
অথচ অতি নশ্বর
একটু আগুনের আঁচেই ক্ষতি হয়ে যায় যার বিস্তর
আর বৃদ্ধতা,
সেতো কেড়ে নিবেই সব অতি সত্ত্বর।
কিন্তু যে মাধুরি নষ্ট হবার নয়
যা থাকবে চিরসবুজ
নূরে নূরান্বিত, আলোকিত,স্বচ্ছ, নিখুঁত।
সে কতটা হতে পারে
আকর্ষণীয় অংগে সুন্দর রুপ
কল্পনাতেও ধরবেনা বুঝ।

যেখানে বলা হয়েছে
জান্নাতের কোন হুর যদি কোন ক্ষণে
তাক করে তার কোন আঙুল
ধরত দুনিয়ার কুল,
তবে সব আলো বিলীন হয়ে
হারাতো তাদের মূল।
যেমনি সব আলো হারিয়ে যায় দিনে
যেখানে সূর্যের আলোই মহাবিপুল।
সেই হুরসমুহের জ্যোতিময় মুখমন্ডল হবে
সাদা,হলদে এবং লাল রংয়ে তৈরী,
যাদের রাণী থাকবে দুনিয়ার নারী।
যারা হবে আঠার বছর বয়ষ্কা
রুপে হুরের চেয়ে সত্তর গুণ গুণী।

হুরগনের কেউ যদি ফেলত থুথু
দুনিয়ার সমুদ্রে একবারই
মিষ্ট শরবতে রুপ নিত
সমুদ্রের নোনা পানি সবই।
তাদের কেউ
দুনিয়াতে এসে দাঁড়াত যদি একবার
অংগের সুবাাসে বিমোহিত হয়ে যেত
জগতের সবখানি।
রুপের দর্শনে দুনিয়ার লোকের
খাওয়া নাওয়া ভুলে কাজকর্ম ফেলে
একরকম পাগলামীতে
ভারসাম্যহীন হয়ে