Kanak Chapa
বাংলার বুলবুল
আমাদের আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল আসলে বাংলার বুলবুল। একাধারে তিনি ছিলেন শক্তিমান লেখক, সুরস্রষ্টা, এবং মিউজিক কম্পোজার।গানের জগতে তিনি ছিলেন সব্যসাচী। সারাজীবন তিনি গান নিয়ে গবেষণা করেছেন। আঞ্চলিক সুর থেকে শুরু করে আরব্য পারস্য ভারতীয় স্পেনীয় সুর নিয়ে নাড়াচাড়া করে তার সাথে নিজের ভালোবাসা মিশিয়ে সুরের আবহ তৈরি করেছেন। তার গানে প্রেম, বিরহ, কটাক্ষ, অনুরাগ, দেশপ্রেম, শিশুর সারল্য, সামাজিক নাটকীয়তা, বিদ্রোহ চাহিবামাত্রই পাওয়া যেত। তাই ছবির গানের ফরমায়েশি জগতে তার কদর ছিল আলাদা। তার সবচেয়ে বড় সুবিধা ছিল নিজেই গান লিখতেন তাই সুর আরও সুন্দর করে বসে যেত। মনে হত এই গানের সুর ও কথা একসাথেই জমজ হয়ে জন্ম নিয়েছে! তিনি আসলে একজন স্বভাবকবি ছিলেন। মুখে মুখে গান বানানোর অসম্ভব দক্ষতা তার ছিল। একই সাথে নিজের সৃষ্টি কে অবহেলা করার দারুণ স্পর্ধাও ছিল। গান রেকর্ড হয়ে গেলে সে লেখা তিনি ছিড়ে ফেলতেন। আমরা আপত্তি জানালে বলতেন আমার গান আমি কেন সংগ্রহ করবো। গান ভালো হলে কালের প্রবাহেই তা জমা থাকবে।
ব্যক্তি জীবনে বোহেমিয়ান টাইপ মানুষটা নিজের জন্য কিছুই করেন নাই। গান গান গান করেই জীবন পার করলেন। জীবনের প্রথম দিকে বেহালা গিটার বাজাতেন, মাঝ বয়সে এসে সেগুলোকেই আবার নতুন করে শেখার জন্য কী প্রচেষ্টাই না ছিলো তার!কিন্তু নিজেকে আরও জ্ঞানের গভীরে নিতে নিজেই নিজের শিক্ষক ছিলেন।
অসম্ভব সাহসী মুক্তিযোদ্ধা সারাজীবন তাঁর গানেও অপার দেশপ্রেম, দ্রোহ, প্রতিবাদ তুলে ধরেছেন। ছবির গানেও তিনি নিজে বায়না করে দেশের গান ঢোকাতেন। ভালো কন্ঠের জন্য তিনি শিল্পী খুঁজে বেড়াতেন আজীবন। আমাকে তিনি নিজে খুঁজে বের করেছিলেন। ৯২ সালের কথা, একটা অনুষ্ঠানে কণ্ঠশিল্পী শাকিলা আপা বললেন কনক, বুলবুল ভাই তোকে খুঁজছেন, তাড়াতাড়ি যোগাযোগ কর।এর পর উনিই আবার ফোন দিলেন। পয়লা গান ছিলো “সাদা কাগজ এই মনটাকে তোমার হাতে তুলে দিলাম ” মিলু ভাইয়ের সাথে ডুয়েট। সেদিনই বুলবুল ভাই বললেন ভাবী, ইনশাআল্লাহ অনেক গান হবে, আপনাকে এমন জায়গায় নিয়ে যাবো কখনো পিছনে তাকাতে হবে না! সত্যিই সেদিন থেকেই আমার আর অবসর ছিলো না। বুলবুল ভাই মাসে গড়ে প্রায় দশটা ছবি হাতে নিতেন এবং তার বেশির ভাগ গান আমাকে দিয়েই গাওয়াতেন। নিজে অনেক গবেষণা করতেন কিন্তু গানের কন্ঠের ব্যাপারে নির্ভরশীল হতে চাইতেন। এর পর আসলেই আমাকে পেছনে তাকাতে হয়নি। প্রায় প্রতিটি গানই মাইলফলক হয়ে যাচ্ছিল। তাঁর গানেই প্রায় সব পুরস্কার পাওয়া আমার! তাঁর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
আমি বিশ্বাস করি আমরা পুরো জাতিই ধন্য যে আমাদের একজন ” আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ” ছিলেন। আর একটি কথা আমি উচ্চ কন্ঠে বলতে চাই ” সব কটা জানালা খুলে দাওনা ” এই গানটি ছাড়া আর যদি কোন গানই সুর না করতেন তাহলেও বাংলাদেশ তাঁর কাছে সমান কৃতজ্ঞ থাকতো।
আমি এই সব্যসাচী সংগীতজ্ঞের মৃত্যুবাষিকীতে তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
সর্বশেষ
- নওগাঁ ১১ টি উপজেলায় ভাদ্র মাসে প্রচন্ডগরমে বিদ্যুৎতের লোডশেডিং এর কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ
- মুন্সীগঞ্জে থানায় আগুন লুটপাটের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে : পুলিশ সুপার
- মুন্সীগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর ছবি অপব্যবহার কর্মকাণ্ডের শীর্ষ মহিউদ্দিন সন্ত্রাসীর কারিগর
- চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে এসপির মতবিনিময়
- বিলাইছড়িতে লাইভ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন
- নওগাঁয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার নিশ্চিতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
সর্বাধিক পঠিত
- নতুন বছরে আসছে ভিন্ন ধরনের প্রেমের গল্প আন্ত:নগর
- তাড়াশে মারুফ হাসান নামের অপহৃত এক মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
- নিয়তির নিমজ্জিত বিধাতার বিধান
- আজ বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু
- 💕💕মাতা-পিতার মৃত্যুর পর সন্তানের করণীয়❤❤
- জয়পুরহাটে রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে পণ্যের মূল নির্ধারণ