শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১
Live TV
সর্বশেষ

কালীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় জামাই শশুরের প্রতিযোগীতা

দৈনিক দ্বীনের আলোঃ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৪, ৭:৪৮ অপরাহ্ণ | 95
কালীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় জামাই শশুরের প্রতিযোগীতা
১৫ জানুয়ারি, ২০২৪, ৭:৪৮ অপরাহ্ণ | 95

 

মোঃ মুক্তাদির হোসেন।
স্টাফ রিপোর্টার।

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বিনিরাইল গ্রামে প্রায় আড়াইশো বছরের ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামাই মেলা নাম হলেও সবাই এই মেলাকে মাছের মেলা নামে চেনে।প্রতি বছর ১৫ই জানুয়ারি এ মেলা অনুষ্ঠিত হয় আসছে।এ মেলার প্রধান আকর্ষণই হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়ে আসা মাছ কিনতে জামাইদের প্রতিযোগিতা। এ মেলাকে মাছের মেলাও বলা হয়ে থাকে।মেলা কমিটির সভাপতি জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কিশোর আকন্দ জানান, প্রতিবছর জানুয়ারী মাসের ১৫ তারিখ এ মেলা বসে,তবে এই মেলা একদিন ই বসে। এই দিনটির জন্য উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ সারা বছর অপেক্ষায় থাকে। কারণ জামাই মেলার মূল আকর্ষণই হলো জামাইদের বড় মাছ কেনার প্রতিযোগিতা।বিনিরাইল ও এর আশপাশের গ্রামে যারা বিয়ে করেছেন সেসব জামাই এই মেলার মূল ক্রেতা। জামাইরা চান সবচেয়ে বড় মাছটি কিনে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যেতে। আবার মেয়ে-জামাইকে আপ্যায়ন করতে শ্বশুরেরাও মেলা থেকে বড় বড় মাছ নিয়ে যান বাড়িতে। মাছ ছাড়াও মেলায় হরেক রকম পণ্য বিক্রি হয়। গতকাল রোববার মেলা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বড় বড় মাছ নিয়ে ব্যবসায়ীরা মেলায় এসেছেন। নানা বয়সী হাজার হাজার ক্রেতার ঢল নামে মেলায়। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে মাছ উপরের দিকে তুলে ধরছেন বিক্রেতারা।স্থানীয়রা জানান, শুধু এ উপজেলার লোকই নয়, আনন্দের এ মেলা উপভোগ করতে টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকেও ছুটে এসেছেন অনেকে। এবারের মেলায় প্রায় চার শতাধিক মাছ ব্যবসায়ী বাহারি প্রজাতির মাছ নিয়ে এসেছেন। মাছের মধ্যে ছিল সামুদ্রিক চিতল, বাঘাইড়, আইড়, বোয়াল, কালিবাউশ, পাবদা, গুলশা, গলদা চিংড়ি, বাইম, কাইক্কা, রূপচাঁদাসহ নানা জাতের দেশি মাছ।তবে এ মেলার বিশেষ আকর্ষন ছিল পাখি নামক এক সামুদ্রিক মাছ। যার ওজন ছিল ৫৫ কেজি এবং লম্বায় প্রায় ৮ ফুট যা এই মেলার সবচেয়ে বড় মাছ,এই মাছের প্রতি কেজি দাম হাকা হয়েছে ৩৫০টাকা,প্রতি কেজি।মাছ ছাড়াও মেলায় আসবাবপত্র, খেলনা, মিষ্টি ইত্যাদির দোকানও ছিল প্রচুর।কিশার আকন্দ জানান, প্রায় ২৫১ বছর ধরে এ মেলার আয়োজন হয়। শুরুতে খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে হতো। প্রথমে শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই মেলার আয়োজন করতেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেলাটি এখন সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। মাছের মেলাটি এ অঞ্চলের ঐতিহ্যের ধারক। মেলায় বেচাকেনা যাই হোক, এ মেলা আমাদের ঐতিহ্য আর কৃষ্টি-কালচার বহন করছে, এটাই সবচেয়ে বড় কথা।

error: Content is protected !!