প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে ও সেখানে তাদের মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের উচিৎ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের উপায় বের করা, যাতে তারা স্বদেশে ফিরে গিয়ে সেখানে একটি সুন্দর জীবনযাপন করতে পারে।’
যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ বিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় দলের (এপিপিজি) ভাইস চেয়ার ও ইন্দো-ব্রিটিশ বিষয়ক এপিপিজি-র চেয়ার বীরেন্দ্র শর্মা এমপি’র নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের ক্রস পার্টি একটি পার্লামেন্টারি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীল সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার এম. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এটিই যুক্তরাজ্য সংসদীয় দলের প্রথম সফর।
বৈঠককালে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭ সালে অমানবিক নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গাদের ব্যাপকভাবে দেশত্যাগের পর বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হলেও, ছয় বছর অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও এই লক্ষ্যে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বৈশ্বিক আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সুতরাং রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের মতো একটি ছোট দেশের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে উঠছে।’
পাঁচ সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধি দলে রয়েছেন- প্রাক্তন টেক ও ডিজিটাল অর্থনীতির কনজারভেটিভ মন্ত্রী পল স্কুলি, এমপি, ইউকে হাউস অফ কমন্স সিলেক্ট কমিটির মেম্বার ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স নীল কোয়েল, এমপি, হাউস অফ কমন্সের বিরোধীদলীয় হুইপ অ্যান্ড্রু ওয়েস্টার্ন, এমপি এবং হাউস অফ কমন্সের সিনিয়র সংসদীয় সহকারী ডমিনিক মফিট।
শেখ হাসিনা বলেন, জোরপূর্বক দেশ থেকে বিতারিত করার সময় বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার গর্ভবতী নারী ছিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ প্রাথমিকভাবে তাদের খাদ্য ও আশ্রয় দিয়েছে।
‘ছয় বছর অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বাস্তবসম্মত কিছুই করেনি। যদিও, তারা আগে তা করতে রাজি হয়েছিল। ফলে, মিয়ানমারের নাগরিকরা বাংলাদেশের ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপন করছে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
‘এমনকি রোহিঙ্গারাও এখন অপরাধমূলক কর্মকা-ে লিপ্ত হচ্ছে-যার মধ্যে মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচার এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও রয়েছে যেগুলো থেকে কখনও কখনও রক্তপাতও ঘটছে,’ তিনি যোগ করেন।