মানিকগঞ্জে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও হিন্দু পরিবারকে হুমকির অভিযোগ
টুরিয়া উপজেলায় বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে এক দিনমজুরের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া এক হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারকে মারধর করার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিএনপির ওই নেতা নাম মোতালেব হোসেন। তিনি তিল্লী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
স্থানীয় লোকজন এবং ভূক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে তিল্লী ইউনিয়নের তিল্লী গ্রামের ভ্যানচালক তারা মিয়ার কাছে স্থানীয় নিকাশী মৌজায় ৪৫ শতক জমি বিক্রি করেন কামরুল ইসলাম ওরফে খোকন। এরপর থেকে ওই জমিতে তারা মিয়া চাষাবাদ করে আসছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট বিএনপি নেতা মোতালেব হোসেন ১৫ থেকে ২০ জন নিয়ে ওই জায়গা দখল করেন। এর পর ওই জমিতে চাষাবাদ এমনকি জমির কাছে না যেতে তারা মিয়াকে হুমকিধমকি দেন। এর পর থেকে ওই জমিতে তারা মিয়া আবাদ করতে পারছেন না। জমি বিক্রেতা কামরুল ইসলাম সম্পর্কে মোতালেবের চাচাতো ভাই।
তারা মিয়া বলেন, ‘ধারদেনা করে বহুকষ্টে ওই জমি কিনছি। আমার জমির সকল কাগজপত্রও ঠিকঠাক আছে। নিয়মিত জমির খাজনাও দিয়্যা আইছি। আমরা কোনো দল করি না। মোতালেব জোর কইর্যা আমার ওই জমি দহল নিছে। তাঁর ভয়ে ওই জমিতে যাইতে পারতাছি না।’
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা মোতালেব হোসেন বলেন, ওই জমি তাঁদের সম্পদ। জমির সব কাগজপত্র তাঁদের নামে রয়েছে। কারও জমি জোর করে দখল করা হয়নি।
চলমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কেন ওই জমিতে দখল নিতে গেলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জমি পতিত ছিল। তিনবার সালিসে বসা হয়েছিল। সালিসে জমির রায় তাঁর পক্ষে পেয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।
আতঙ্কে এক হিন্দু পরিবার: বিএনপির এই নেতার হুমকিধমকিতে তিল্লী ঘোষপাড়া গ্রামের এক হিন্দু পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন। মারধরের ভয়ে ওই পরিবারের পুরুষ মানুষ বাজারে যেতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে ভূক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ছয় মাস আগে তিল্লী গ্রামের রঞ্জিত সরকারের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে জমিসংক্রান্ত পারিবারিক আর্থিক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে বিএনপি নেতা মোতালেব ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে রঞ্জিত সরকার পারিবারিকভাবে বিরোধ মিমাংসা করেন এবং চাহিদার টাকা মোতালেবকে দেননি। এ নিয়ে তাঁর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মোতালেব মিয়া ও তাঁর দুইজন সহযোগী দিয়ে রঞ্জিত সরকারকে মারধর করার হুমকি দেন।
রঞ্জিত সরকারের মেয়ে চন্দনা সরকার বলেন, ‘আমার বাবা ছাড়া আমাদের সংসারের উপার্জনের কেউ নেই। হুমকিধমকির কারণে আমার বাবা তিল্লী বাজারে কর্মস্থল এনজিওর অফিসে যেতে পারছেন। এমনকি মারধরের ভয়ে বাজারেও যেতে পারছেন না। কখন যেন আমার বাবাকে মারধর করা হয়, তা নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
রঞ্জিত সরকার বলেন, ‘আমি ১০ বছর আগে ইউপি সদস্য ছিলাম। আমি কোনো দল করি না। এরপরও আমাকে মারবে-কাটবে বলে হুমকি দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোতালেব হোসেন বলেন, স্বৈরাচার সরকারের সময় তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়েছে। তাঁর ধারণা, এসব মামলায় তাঁকে আসামি করার ক্ষেত্রে রঞ্জিত সরকারের ভূমিকা ছিল। তবে তাঁকে মারধর করার হুমকিধমকি দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। রঞ্জিত সরকারকে তিনি কোনো হুমকিধমকি দেননি।
এসব বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা বলেন, কোনোকিছু ভাঙচুর, দখল, চাঁদাবাজি এবং হুমকিধমকি না দিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের কঠোরভাবে হুঁশিয়ার দেওয়া হয়েছে। এরপরও কেউ যদি এসব করলে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
সম্পর্কিত খবর
সর্বশেষ
- চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘন ঘন লোডসেটিং অতিষ্ঠ জনজীবন
- নওগাঁয় পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার
- কুড়িগ্রাম ভূরুঙ্গামারীতে দাখিল মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
- নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেকের ইন্তেকাল
- চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত
- ময়মনসিংহে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রশাসনের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত
সর্বাধিক পঠিত
- নতুন বছরে আসছে ভিন্ন ধরনের প্রেমের গল্প আন্ত:নগর
- তাড়াশে মারুফ হাসান নামের অপহৃত এক মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
- নিয়তির নিমজ্জিত বিধাতার বিধান
- আজ বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু
- 💕💕মাতা-পিতার মৃত্যুর পর সন্তানের করণীয়❤❤
- জয়পুরহাটে রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে পণ্যের মূল নির্ধারণ